প্রশ্ন: অন্ধ ব্যক্তি নামাজের ইমামতি করার হুকুম কী?
আলহামদুলিল্লাহ ওয়াস সলাতু ওয়াস সালামু আলা রাসূলিল্লাহ। হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সা.) (তাবূক যুদ্ধে গমনকালে) ইবনু উম্মু মাকতূমকে (মাদিনার) শাসক নিয়োগ করেছিলেন। তিনি লোকদের ইমামতি করতেন, অথচ তিনি অন্ধ ছিলেন। সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৫৯৫
আওনুল মাবুদ প্রণেতা বলেন, আনাস (রা.) এর হাদিস এর উপকারিতা হলো, অন্ধ ব্যক্তির ইমামতি জায়েজ। ইবনুল মুঞ্জির বলেন, অন্ধের ইমামতি করা বৈধ আহলে এলেমদের ঐক্যমতে। ইবনে উম্মে মাকতুম, মাহমুদ বিন রবি, ইতবান বিন মালেক প্রমুখ অন্ধ সাহাবী ইমামতি করেছেন। আওনুল মাবুদ ৪র্থ খন্ড ২৯৭ পৃষ্ঠা।
ইমাম জুহরী বলেন, নিশ্চয়ই রাসুল সাঃ এর কতেক সাহাবী রা. অন্ধ অবস্থায় ইমামতি করেছেন। তন্মধ্যে ইতবান বিন মালেক, মুয়াজ বিন আফরা, ইবনে উম্মে মাকতুম অন্যতম। আবু জাফর বলেন, জাবের রা. এর দৃষ্টি চলে যাওয়ার পর তিনি আমাদের ইমামতি করেছেন। আমর ইবনে আতিয়্যা বলেন, অন্ধ অবস্থায় মুসায়্যিব আমাদের ইমামতি করেছেন।
ইবনে আব্বাস রা. বলেন, তারা কিভাবে ইমামতি করবে তারা কি আমাকে কেবলামুখী করতে পারবে? জিয়াদ আননুমাইরী বলেন, আমি আনাস (রা.) কে অন্ধ ব্যক্তির ইমামতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তিনি বললেন ঐদিকে তোমাদেরকে কিসে মুখাপেক্ষী করলো? সাঈদ বিন জুবায়ের বলেন, অন্ধ ব্যক্তি ইমামতি করবে না। সহেবুল মাবসুত বলেন- অন্ধ, বেদুইন, গোলাম, জারজ ও ফাসেকের ইমামতি জায়েজ। নিশ্চয়ই ইমামতির মর্যাদাটা রাসুল সাঃ থেকে উত্তরাধিকারী হিসেবে প্রাপ্ত।
নিশ্চয়ই অন্ধের ইমামতি জায়েজ কেননা রাসূল (সা.) একবার আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুমকে মদিনায় ইমাম বানিয়েছেন ইতবান বিন মালেককে একবার ইমাম বানিয়েছেন আর তাঁরা দুজন ছিলেন অন্ধ সাহাবী। তবে দৃষ্টি সম্পন্ন ব্যক্তির ইমামতি উত্তম। কেননা ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, তারা কিভাবে ইমামতি করবে তারা কি আমাকে কেবলামুখী করতে পারে? এবং অন্ধ ব্যক্তি তার কাপড়কে অপবিত্রতা থেকে রক্ষা করতে সক্ষম নয়। এজন্য দৃষ্টি শক্তি সম্পন্ন ব্যক্তির ইমামতি উত্তম। আল মাবসুত ১ম খন্ড ১০৯ পৃষ্ঠা।
বাহরুর রাায়েক কিতাবে আল মুহিত কিতাবের বরাতে উল্লেখ আছে, অন্ধ ব্যক্তির ইমামতি মাকরুহ হওয়া শর্ত যুক্ত। যাদের ইমামতি করবে তাদের মধ্যে অন্ধ ব্যক্তির চেয়ে কেউ যদি উত্তম থাকে তাহলে সে ইমামতি করবে। আর যদি অন্ধই উত্তম হয় তাহলে অন্ধ ব্যক্তি ইমামতি করবে। আর এই সম্ভাবনায় ইবনে উম্মে মাকতুম এবং ইতবান বিন মালেক ইমামতি করেছিলেন কেননা সে সময় মদিনায় তারাই ইমামতির জন্য উত্তম ব্যক্তি ছিলেন। (আল বাহরুর রায়েক শরহু কানযিদ দাকায়েক ৩য় খন্ড ৩৯৬ পৃষ্ঠা)
লিখেছেন, মুফতি মোঃ মাছুম বিল্লাহ বাশারী, ইমাম ও খতিব – উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ব্রাহ্মণপাড়া, কুমিল্লা।