কোরবানি একটি মৌলিক ইবাদত যার মাধ্যমে বান্দা আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য হাসিল করে থাকে। এটি ইসলামের স্বতন্ত্র ইবাদত ও শেয়ার বা নিদর্শন। ইসলাম কখনো তার একটি আমলকারীকে অন্য আমল থেকে নিষেধ করে না। তাই কোরবানি আদায়কারী সদকাও আদায় করে থাকে। সদকা আদায় করতে হলে কোরবানি নিষেধ করা আবশ্যক নয়।
ফোকাহায়ে কেরাম এ বিষয়ে মতামত পেশ করেছেন, ইমাম নববী রহ. বলেন, সাধারণ সদকা করার চেয়ে কোরবানি করা উত্তম। কেননা কোরবানি হলো ইসলামের প্রকাশ্য নিদর্শন। (আল মাজমু ৮/৪০৪)
সাঈদ ইবনু মুসায়্যিব বলেন, আমি বকরি দিয়ে কোরবানি করে থাকি কেননা তা আমার কাছে ১০০ দিরহাম সদকা করার চেয়েও পছন্দনীয়। (আল মুসান্নাফ লি আব্দির রাজ্জাক ৪/৩৮৮)। ইমাম সোরাখসী রহ. বলেন, সমপরিমাণ মূল্য সদকা করার তুলনায় আমার কাছে কোরবানি করা বেশি পছন্দনীয়। (আল মাবসুত ১২/২৯)। ইবনে কুদামাহ বলেন , কোরবানির পশুর মূল্য সদকার চেয়ে কোরবানি করা উত্তম। (আল মুগনি ৮/৪২৬) আবু ওমর আব্দুল বার বলেন, ঈদের নামাজ যেমন আবশ্যক তেমনি কোরবানি করাও আবশ্যক। এজন্য সদকার চেয়ে কোরবানি উত্তম।(আত তামহীদ ২৩/১৯২) । ইবনুল কাইয়ুম বলেন, কোরবানির পরিবর্তে যত বেশি মূল্য সদকা করা হোক না কেন কোরবানি করা উত্তম। (তুহফাতুল মাওদুদ বি আহকামিল মাওলুদ ১৬৪)
মূল্য সদকা না করে কোরবানি করাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দেখানো পথ। এ পথে রাসূল সাঃ ইন্তেকাল অবধি আমল করেছেন এবং সাহাবা, তাবেয়ী ও মুসলমানদের আমল চলে আসছে। রাসূল সাঃ সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি না করা ব্যক্তিকে ঈদগাহের ধারেকাছেও যেতে নিষেধ করেছেন। যিনি কোরবানি আদায় করেন তিনি একই সঙ্গে গোশত দ্বারা সদাকাও আদায় করে থাকেন। বুখারী ৫১৪৩
যদি এমন কোনো দেশ বা এলাকায় কোরবানি করার জন্য গৃহপালিত পশু পাওয়া না যায় বা এমন কোন এলাকা যেখানে গুটিকয়েক মুসলিম পরিবার আছে এবং তাদের দ্বারা কোরবানির পশু সংগ্রহ সম্ভব নয় কিন্তু কোরবানি করার সামর্থ্য আছে তাহলে যেখানে পাওয়া যায় সেখানে কোন মুসলিম ভাইয়ের কাছে মূল্য পাঠিয়ে দিয়ে কোরবানি করতে হবে তথাপিও মূল্য সদকা করা যাবে না।
মুফতি মাছুম বিল্লাহ বাশারী, ইমাম ও খতিব – উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ব্রাহ্মণপাড়া, কুমিল্লা